ads

সুবিধাবাদী

 পূর্ববর্তী ধর্ম অনুসারে মক্কার কাফিররাও নিষিদ্ধ মাসগুলোকে মান্য করতো, এর বিধান ও গুরুত্ব স্বীকার করতো এবং এর মর্যাদা রক্ষা করাকে ধর্মের অংশ মনে করতো।

কিন্তু কখনো যদি এই মাসগুলোতেই তাদের যুদ্ধের প্রয়োজন দেখা দিতো; তখন তারা এতে ‘নাসি’ করতো। ‘নাসিউ’ মানে পরবর্তী বছর অথবা নির্দিষ্ট মাসের বাইরের কিছু মাসকে নিষিদ্ধ মাস হিসেবে ঘোষণা করে আল্লাহর নির্ধারিত মাসগুলোতেই যুদ্ধে জড়িয়ে যেতো।
যেমন নিষিদ্ধ মাসসমূহ হলো; রজব, জিলকদ, জিলহজ্জ এবং মুহাররম। তারা এর পরিবর্তে পরবর্তী বছর অথবা সফর থেকে পরবর্তী চার মাসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, সে মাসগুলোকে নিষিদ্ধ মাসের মতো মর্যাদা দিতো।
তারা আল্লাহর বিধান অস্বীকার করতো না এবং তাদের এই বিধান লঙ্ঘন করার ইচ্ছাও নাই। কিন্তু নানা কারণে তাদের এই মাসেই যুদ্ধের প্রয়োজন!। তো এখন তারা কী করবে?। তারা নিজেদের প্রয়োজনটা পূর্ণ মাত্রায় ঠিক রেখে আল্লাহকে পুষিয়ে দেয়ার একটা পথ বের করলো। আল্লাহর নিষিদ্ধ মাসেই যুদ্ধ করে, আল্লাহকে বুঝ দিতে পরবর্তীতে নিজেদের মত করে কিছু মাস নিষিদ্ধ মাস হিসেবে ঘোষণা করলো।
কুরআনুল কারীম তাদের এই প্রবণতাকে সাধারণ কুফরির চেয়েও মারাত্মক কুফরি বলে আখ্যায়িত করেছে। এবং একে চাতুরীর মাধ্যমে আল্লাহর কৃত হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করার মতো ঘৃণ্য কাজ বলে মন্তব্য করেছে।
ইরশাদ হয়েছে--
إِنَّمَا النَّسِيءُ زِيَادَةٌ فِي الْكُفْرِ يُضَلُّ بِهِ الَّذِينَ كَفَرُواْ يُحِلِّونَهُ عَامًا وَيُحَرِّمُونَهُ عَامًا لِّيُوَاطِؤُواْ عِدَّةَ مَا حَرَّمَ اللّهُ فَيُحِلُّواْ مَا حَرَّمَ اللّهُ زُيِّنَ لَهُمْ سُوءُ أَعْمَالِهِمْ وَاللّهُ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ
“এই মাস পিছিয়ে দেয়ার কাজ কেবল কুফরীর মাত্রা বৃদ্ধি করে, যার ফলে কাফিরগণ গোমরাহীতে পতিত হয়। এরা হালাল করে নেয় একে এক বছর এবং হারাম করে নেয় অন্য বছর, যাতে তারা গণনা পূর্ণ করে নেয় আল্লাহর নিষিদ্ধ মাসগুলোর। অতঃপর হালাল করে নেয় আল্লাহর হারামকৃত মাসগুলোকে। তাদের মন্দকাজগুলো তাদের জন্যে শোভনীয় করে দেয়া হল। আর আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না”। (সুরা তাওবা-৩৭)
আমাদের চার পাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে আল্লাহর বিধানকে সরাসরি অস্বীকারতো করতে পারে না, কিন্তু তারা এতে নিজেদের প্রয়োজন মতো এমন সব ব্যাখ্যা হাজির করে যা অস্বীকারেরই নামান্তর। সম্প্রতি মূর্তি নিয়ে যা হচ্ছে, তার অনেক কিছুই এমন।
সেদিন দেখলাম একজন বাবার সম্পদে ছেলে-মেয়ের হক সমবন্টন করার সুবিধা পেতে, ছেলে-মেয়ে না লিখে ‘সন্তান’ লেখা যায় কি না সে ব্যাপারে পরামর্শ করার আহবান করলেন।
আবার এমন কথাও বলতে দেখলাম; ছেলের প্রস্তাবে মেয়ে সম্মত হলেই শারীরিক সম্পর্ক বা সঙ্গম বৈধ; এটাই হলো ইসলাম ধর্মীয় বিয়ে। সাক্ষী থাকা বা মোহরানা নির্ধারণ করা বড় কোনো বিষয় নয়।
এর সবই হলো, সেই প্রবণতা কুরআনুল কারীমে যাকে زِيَادَةٌ فِي الْكُفْرِ (কুফরীতে সীমালংঘণ) বলে ঘোষণা করেছে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, আল্লাহর বিধানকে তাঁর শেখানো পদ্ধতিতে, তাঁর প্রেরিত রাসুলের ব্যাখ্যা অনুসারে পালন করার নামই ঈমান। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সেভাবেই পালন করার তাওফীক দিন, যেভাবে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ঈমান ইসলাম শিক্ষা দিয়েছেন। আমিন

No comments:

ads
Theme images by A330Pilot. Powered by Blogger.