কাছে আসার গল্প ও ব্যবসা
ক্লোজ আপ দিয়ে দাঁত মেজে বিপরীত লিংগের কারো মুখের সামনে গিয়ে হা করে গন্ধ (দুর্গন্ধ না সুগন্ধ তা মুখ্য নয়) দিয়ে তাকে পাগল করে কাছে এসে ভালোবেসে লিটনের ফ্ল্যাটে গিয়ে আকাম কুকাম করার পর পিউলি তে কাজ না হলে এবরশন বা পেটের/ পাপের বোঝা টা ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলার পুরো যেই প্রক্রিয়া সেটা যে কতখানি মারাত্মক গুনাহ, ক্ষতিকর, ধ্বংসাত্মক কাজ তা আমি আপনি যতই নীতিকথা দিয়ে তাদের সামনে তুলে ধরতে চাই তারা তা শুনবে না, দেখবে না, পড়তে চাইবে না, চাইলেও ফলাফলে তেমন কোন প্রভাব পড়বেনা, বা পড়ছেনা!
তো যাই হোক, কেনো তারা শুনবেনা? কেনো পড়বেনা? কেনো জানলেও না জানার, না বোঝার ভান করে রইবে? এমন না যে, প্রত্যেকেই চায়, অবৈধভাবে কাছে এসে ক্লোজ আপের ঝিলিক দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেদের জারজ সন্তানের খুনী হিসেবে নিজেকে আবিষ্কার করতে! মানুষ যতই ধর্ম এড়িয়ে যাক, ন্যুনতম ফিতরাহ বোধ থেকেই জানে যে সাময়িক এই পাপের মজার যে করুণ পরিণতি তা আসলে খুব ই নিচু প্রকৃতির পশুত্ব স্বভাব, যা সহজে কেউ স্বেচ্ছায় সারাজীবন বয়ে বেড়াতে চায়না! কেবল গুটিকতক আত্মা পচে মোহর পড়ে যাওয়া মানুষ ছাড়া অধিকাংশ মানুষ চায় তার চরিত্র অন্তত এতটা কলুষিত না হোক!
কিন্তু সমস্যা টা কখন হয়? সমস্যা টা তখন ই হয়, যখন এই হাইপারসেক্সুলাইজড সমাজে প্রতিনিয়ত যৌনতাকে কেন্দ্র করে উষ্কে দেওয়া কর্পোরেট সাম্রাজ্যবাদের যাতাকলে পিষ্ট হওয়া যুবক যুবতীদের হালাল উপায়ে যৌন আচরণ চরিতার্থ করার সহজ সাবলীল গ্রহণযোগ্য মাধ্যম অনেক কঠিন করে ফেলা হয়, যার নাম বিয়ে।
ক্যারিয়ার, সামাজিকতা, রাষ্ট্রীয় আইন, নারী অধিকার, নারী শিক্ষা, প্রেম ভালোবাসার ইলিউসিভ রুপ সব মিলিয়ে বিয়েটাকে যখন শত ভ্যারিয়েবল দিয়ে যতটা পারা যায় তার চেয়েও বেশি কঠিন করা হয়, তখন বয়:সন্ধির পাগলাটে যৌনতার কৌতুহল আর যৌবনের ছটফটে শরীর মন কে আর দমিয়ে রাখা যায়না, সেটা কোন না কোন ভাবে আত্মপ্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রেম ভালোবাসা নামক লোক দেখানো অবৈধ যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়বেই!
এর দায়ভার কারো একার না! তবে সবচেয়ে বেশি এই জন্য যাদেরকে দায়ী করা উচিত তারা হলো এই ছেলেমেয়েদের বাবা মায়েরা! না তাদেরকে আপনি ধর্ম শিখালেন, না তাদের নীতি নৈতিকতার স্ট্যান্ডার্ড শিখালেন, না তাদের ইন্টারনেট এর ভার্চুয়াল জগত থেকে অফলাইনের জগতকে নিয়ন্ত্রিত রাখার উপায় দেখালেন, না তাদের যৌন চাহিদার স্বরুপ বুঝলেন, না সেই অনুযায়ী কোন পদক্ষেপ নিলেন, আর না তাদের জন্য তা সহজ করলেন!
তো আপনার ছেলেমেয়ে আপনার মুখে চুনকালি দেবে না তো ফুলচন্দন দেবে? আপনার আড়ালে আবডালে বি এফ জি এফ নিয়ে আকাম করবে না তো ডুগডুগি বাজাবে? পর্ণগ্রাফিতে জীবন যৌবন হারাবে, হতাশায় ধ্বংস হবে না তো কি দুনিয়া জয় করে আনবে!
আপনারা এতোটা বেকুব তো নন যে এইসব এখনো বোঝেন না! এতোটা হিপোক্রিট কেন আপনারা বলেন তো? নিজের কৈশোর যৌবনের সময়ের সমস্যার কথা বুঝলেও তো এইসব এর সমাধান নিয়ে ভাবতেন, নিজের ছেলেমেয়েদের চরিত্র রক্ষার উপায় নিয়ে ভাবতেন!
না তা করবেন কেনো! সমাজের পূজা করবে কে তাহলে! নিজের নোংরা চরিত্রের মত করে নিজের ছেলেমেয়েদের গড়তে হবেনা! নিজের নোংরা আদর্শ রেখে যেতে হবেনা! ছেলে মেয়ের ক্যারিয়ার ধুয়ে সেই পানি খেয়ে আত্ম অহংকারের গান গাইতে হবে না! আমার ছেলে কি এমন নাকি, আমার মেয়ে খারাপ নাকি! এমন সত্য জেনেও এড়িয়ে যাওয়ার হিপোক্রিট চরিত্র টা ধরে রাখতে হবেনা!
যতই ক্যারিয়ারিক, সামাজিক, আইনিক অযুহাত দেখান আপনি ভালো করেই জানেন চরিত্র কি জিনিস! আর এই যুগে তা ধরে রাখা কতটা কঠিন! তারপরেও আপনারা সমাজের গোলামী করবেন, নিজের জিদের গোলামী করবেন! তবুও কাছে আসো, ভালোবাসো ডাস্টবিনে ফেলো সংস্কৃতির ধ্বংসাত্মক এই প্রচলন থেকে ভেতরে ভেতরে ধুকে ধুকে মরা নিজের সন্তানদের সঠিক সময়ে হালাল যৌন চাহিদা পূরণের সঠিক সহজ ব্যবস্থায় একটু নমনীয় হবেন না! না হয়, আপনাদের সামাজিক ভদ্রতার মুখোশ টা যে খুলে পড়বে!
যৌনতার কর্পোরেট মাস্টারদের না হয়, অশ্লীলতা প্রচার ই ব্যবসা! অথচ আপনি বাবা মা হয়ে কি করে পরোক্ষভাবে সেই একই আচরণ করছেন যার দায়ভার কাল আখিরাতে আপনাকে জাহান্নামে ছুড়ে ফেলার উপযোগী করে তুলছে প্রতিনিয়ত?
আপনাদের আর কবে বোধদয় হবে? নাকি আদৌ হবে না! আজকাল আপনাদের কিছু বলা আর জড় পদার্থের সামনে চিল্লানো একই কথা! কিছু বুঝবেন, উপলব্ধি করবেন, পদক্ষেপ নেবেন এমন আশা করা বোকামী!
ছেলেমেয়ের ভাতের খিদা বুঝলেন, অথচ রাতের খিদা বুঝলেন না! আফসোস!
No comments: