ads

দারুল আমান কি

দারুল আমান বলতে মূলত যা বুঝানো হয় তা হল কাফিরদের রাষ্ট্রে, সাম্রাজ্যে যে অঞ্চলে মুসলিমরা আমানের সাথে থাকতে পারে।

.

আমানের সাথে থাকা মানে কি? আমান মানে নিরাপত্তা। অর্থাৎ একজন মুসলিম দ্বীন ও দুনিয়ার যাবতীয় কাজ-কর্ম নিরাপত্তার সাথে করতে পারে, সেটা দারুল আমান।

.

এখন কাফিরদের একটি রাষ্ট্রে কিভাবে এই আমান অর্জন সম্ভব?

.

১। কাফিরদের সর্দার অথবা সরকার প্রধানের সাথে নিরাপত্তার চুক্তির মাধ্যমে। অর্থাৎ চুক্তিটা এমন হবে যে সেখানে হারাম কোন বিষয়ে অঙ্গীকার থাকবে না। এই যামানায় বিতর্কের জায়গা হল এই চুক্তিটা সীমারেখা নির্ধারণ নিয়ে।

.

২। কোন চুক্তি হয় নি। মুসলিমরা জাস্ট কুফির অধ্যুষিত অঞ্চলে গিয়ে থাকছে। কেউ কারো নিরাপত্তায় হুমকি দিচ্ছে না। 

.

আবার দেখা যায় যে একটি কাফিরদের রাষ্ট্রে কিছু মুসলিম নিরাপত্তার সাথে থাকে, আবার কিছু মুসলিম নিরাপত্তার সাথে থাকে না। এখন সেই দেশকে কি নিরাপত্তার দেশ অথবা দারুল আমান বলা যাবে?

.

যে নিরাপত্তার সাথে আছে, তাকে জিজ্ঞেস করুন। সে বলবে যে, হ্যাঁ যাবে! যেমন শাইখ ইয়াসির কাদী আমরিকাকে এটাই বলবে, বলেও থাকে। অথচ আপনি যদি উস্তাদ তারিক মেহেন্নাকে জিজ্ঞেস করেন যে আমরিকা কী মুসলিমদের জন্য দারুল আমান তথা তারা কি মুসলিমদের নিরাপত্তা দেয়? তিনি বলবেন, না। এবং তিনি নিজেও নিরাপদে নেই।

.

এখন এই দুইজনের দাবী কি একই সাথে সত্য হওয়া সম্ভব নাকি না, হলে কেন, না হলেই বা কেন?

.

যদি ধরে নেই, দারুল আমান সামগ্রিকভাবে মুসলিমদের জন্য, কোন নির্দিষ্ট গ্রুপের মুসলিমদের জন্য না। তাহলে আমরিকা দারুল আমান প্রমাণিত হবে না। কারণ এই দেশে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থাটি ইনস্টল করা আছে, সেটাকে চালিয়ে তারা মুসলিমদের দেশগুলোতে নিরাপত্তা নষ্ট করছে। এবং তাদের নিজেদের দেশেও সব ধরণের মুসলিমদের আমান সমান নয়।

.

আর যদি ধরে নেই যে কোন নির্দিষ্ট গ্রুপ চুক্তি করলে, সেটা সেই গ্রুপের জন্য দারুল আমান বলে বিবেচিত হতে পারে, তবে এই আমান প্রাপ্ত গ্রুপগুলোর কাঠামোটা কেমন হওয়া উচিত, এগুলো স্পষ্ট করতে হবে। চুক্তির মধ্যে অন্য মুসলিমদের ক্ষতি করার চুক্তি, অথবা ইসলামের কোন বিধানকে বিকৃত করার চুক্তি, এগুলো অবশ্যই বৈধ চুক্তির মধ্যে পড়ে না। তাই এগুলো করে দারুল আমান বানানো সম্ভব নয়। 

.

মুসলিমরা অপরাধ না করল, হালাল চুক্তির ভিতর থাকলে তাদের ভয়ে থাকার কথা নয়। অথচ অনেককে অজুহাত দিতে দেখা যায় যে তাদের উপর নির্যাতন আসতে পারে, তারা ভয়ে আছে। অর্থাৎ তাদের নিরাপত্তা নেই, অথচ এরপরও তাদের অনেকে সেটাকে দারুল আমান বলে নিজেরাই নিজেদের খন্ডন করে, যদিও তারা তা বুঝতে পারে না। বা বুঝলেও বলে না, কারণ ইন্টারেস্ট সার্ভ হয় না। 

.

এই প্রকারের লোকদের অনেককেই বলতে দেখা যায় যে, দারুল আমানে সেই দেশের বিধান মানতে হবে। যদি জিজ্ঞেস করা হয়, হারাম কাজগুলোও? তারা বলে যে, নাহ - যেগুলোর সাথে ইসলামের সংঘর্ষ নেই সেগুলো মানতে হবে। 

.

প্রশ্ন হচ্ছে, একই কথা তো দারুল ইসলামের ক্ষেত্রেও। একই কথা তো শরঈ আমীরের ক্ষেত্রেও যে তার কথা মানতে হবে, মুসলিম দেশের বিধান মানতে হবে, কিন্তু অবশ্যই আল্লাহর বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কোন বিধান নয়। এটা তো আনুগত্যের শপথ। অথচ দারুল আমানে তো মুসলিমরা কাফিরদের কাছে আনুগত্যের শপথ দিবে না, তারা চুক্তি করবে। চুক্তি আর আনুগত্যের শপথ কি এক? যদি একই হয়, তাহলে বা’য়াত না বলে আমান-আহাদ বলা হয় কেন? আর যদি একই না হয়, তাহলে কেন একইরকম ভাবে বলা হয় যে রাষ্ট্রের বিধান মানতে হবে?

No comments:

ads
Theme images by A330Pilot. Powered by Blogger.