বর্তমান সময়ে দাওয়াত
“বর্তমান সময়ে দাওয়াতের রীতি ও কৌশল কিছুটা পরিবর্তন করা দরকার। দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামের সুউচ্চ মূল্যবোধের কথা তুলে ধরতে হবে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের প্রতিটি মানুষ জানবে, ইসলামের মূল ভিত্তিই মানুষের সম্মান ও মর্যাদার ওপর প্রতিষ্ঠিত। কুরআনে বলা হয়েছে-
'আমি বনি আদমকে সম্মানিত করেছি, জলে ও স্থলে তাদের চলার বাহন দিয়েছি, উত্তম রিজিক দিয়েছি এবং যাদের সৃষ্টি করেছি, তাদের অনেকের মধ্যে তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।' (সূরা বনি ইসরাইল : ৭০)
মাক্কি জীবনে কুরআনের সম্বোধন ছিল-'ওহে মানুষ'। তারপর মাদানি জীবনে সম্বোধনে পরিবর্তন আসে। তখন হয়ে যায় ‘হে ঈমানদারগণ’। বলা হয়েছে-
'হে মানুষ! আমি তোমাদের এক পুরুষ ও নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যেন তোমরা একে অপরকে জানার সুযোগ পাও। নিশ্চয় তোমাদের মধ্য থেকে আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম ব্যক্তি হলো-যে সর্বোচ্চ তাকওয়াবান।' সূরা হুজুরাত : ১৩
কুরআনের এই শিক্ষা যেন আমরা কিছুতেই ভুলে না যাই। খুবাইব ইবনে আদির কথা নিশ্চয় মনে আছে। মৃত্যুর মুখে দৃঢ় ও অবিচল খুবাইব। মক্কার এক সংকীর্ণ কক্ষে তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়। তাঁকে তাঁর আত্মীয়স্বজন ও গোত্রের সামনে হত্যা করা হবে। এ নিয়ে তাঁর মধ্যে কোনো বিকার নেই; নেই কোনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। একটু আগে ক্ষৌরকর্ম সেরেছেন, যেন মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার আগে নিজেকে প্রস্তুত করে নিচ্ছেন। তাঁর হাতে এখনও সেই ক্ষুর।
এমন সময় তাঁর কক্ষে একটি বাচ্চা আসে। যারা তাঁর হত্যার আয়োজন করছে, তাদের বাচ্চা। তিনি শিশুটিকে আদর করলেন। প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে শিশুটিকে হত্যা করতে যাননি! এই ছিল শত্রুদের সাথে মুসলমানদের আচরণ। তাই আমরা যেন কিছুতেই শত্রুতার বশে অন্ধ হয়ে না যাই। প্রতিশোধপরায়ণতা যেন আমাদের আত্মপরিচয় ভুলিয়ে না দেয়।”
- ড. সালমান আল-আওদাহ, মা‘আল মুস্তাফা (সা)
No comments: