রিযিক ও নিয়ত
আমার পরিচিত এক ভদ্রলোক তার জমানো টাকার বিশাল এক অংশ চিকিৎসা বাবদ রেখে দিয়েছেন। তার ধারনা তিনি কোন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হবেন এবং সেটার জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন হবে। পরবর্তীতে তিনি আসলেই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং বহু টাকা খরচ করে মারা যান অবশেষে।
নিজের এবং সন্তানদের ফিউচার সিকিউরড রাখার জন্য টাকা জমানো, একটা পর্যায়ে এ ব্যাপারে বিশ্বাস আমাদের এতই মজবুত হয়ে যায় যে, নাউযুবিল্লাহ টাকা পয়সাকেই আমরা সেকেন্ড গড মানতে থাকি। যার টাকা রোজগারের কোনই পথ নেই, তাকেও যে আল্লাহ বিনা শ্রমে কারো কাছে হাত না পেতে সুন্দর ভাবে পালতে পারেন, তিনি চাইলে বহু ধন রত্নের মালিকও অভাবের মুখোমুখি হতে পারে, এই বিশ্বাস ঢিলে হতে থাকে অজান্তেই। মুখে সে বলে, আল্লাহই করেন, টাকা পয়সা তো উসিলা, কিন্তু তার কাজকর্মে প্রকাশ পায় উল্টো।
আল্লাহ সম্পর্কে আপনি যেরকম ধারনা রাখবেন, আপনার সাথে তেমনই আচরন করা হবে। এটা আমার কথা না, স্বয়ং আল্লাহর রাসুল ( ﷺ ) বলেছেন। আল্লাহর রাসুল ( ﷺ )আল্লাহর কাছে আফিয়াত চাইতে বলেছেন। আফিয়াত অর্থ সুস্থ থাকা, অভাবমুক্ত থাকা, নিশ্চিন্ত ও পেরেশানীমুক্ত জীবন পাওয়া। তিনি এও বলেছেন, যাকে আফিয়াত দেয়া হয়, তার জন্য এর চেয়ে বড় অনুগ্রহ আর হতে পারে না।
টাকা জমানোতে নিষেধ নেই। যদি তা নিজ পরিবারের পেছনে দৈনন্দিন স্বাভাবিক খরচ এবং যাকাত, কুরবানী, হজ্জসহ ফরজ ও দ্বীনি বিধানগুলো পালনে বাধা না হয়। টাকা পয়সাকে কেবল মাধ্যম মনে করেন নাকি মুল, তা নির্ধারনের মাপকাঠিও এটাই।
অনস্তিত্ব থেকে যিনি অস্তিত্বে এনেছেন, বিনাশ্রমে যিনি মায়ের পেটে রিযিক দিয়েছেন, তিনি আমার ভবিষ্যত আফিয়াতের সাথে রাখতেও সক্ষম।
বিশ্বাস এটাই, এটাই ঈমান।
Rizwanul Kabir
No comments: