রান্না ও শাশুড়ী সেবা
ইসলাম নারীদেরকে রান্না ও শাশুড়ির সেবা করতে বলেনি, এটা অনেককেই বলতে শোনা যায়। বিষয়টা এতটা সরল নয়। এটা মৌলিকভাবে ধর্মীয় বিষয় নয়, সামাজিক বিষয় : সামাজিক-পারিবারিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে।
স্বামীর যদি রান্না ও সেবার জন্য কোন সেবিকা রাখার মতো অর্থনৈতিক সামর্থ না থাকে, পাশাপাশি স্ত্রীও সেবা করতে অস্বীকার করে, তবে তো সংসার জীবন থেমে যাবে। সংসার থেমে গেলে বিবাহই টিকবে না। শাশুড়ির সেবার ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা থাকলেও রান্নার ক্ষেত্রে বিকল্প না থাকলে স্ত্রীকেই দায়িত্ব বহন করতে হবে।
আমরা ফাতেমা ও আসমা (রাঃ) এর জীবন থেকে এটাই শিক্ষা পাই। ফাতেমা সেবিকা চাইলেও নবীজি তাকে সেবিকা ব্যবস্থা করে দেননি। আসমা একটা সময় পর্যন্ত স্বামীর কাজে সাহায্য করতে ঘরের বাইরেও সময় দিয়েছেন। তবে এখানে তিনটি বিষয় মনে রাখা দরকার।
ক) স্বামীর অর্থনৈতিক সামর্থ থাকলে স্ত্রী রান্না ও শাশুড়ি সেবার জন্য সেবিকা চাইতে পারে। সুযোগ থাকলে অবশ্যই সেবিকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। কেননা রান্না বা শাশুড়ি সেবা শ্রমমূলক কাজ। বিবাহ মানে ফ্রি শ্রমিক কিনে আনা নয়। অবশ্য বিবাহের প্রয়োজনে শ্রম দানের প্রয়োজন হলে অবশ্যই শ্রম দিতে হবে।
খ) স্বামীর বাবা-মায়ের মতো স্ত্রীর মা-বাবার প্রতিও দায়িত্ব থাকবে। সামাজিক রীতি অনুযায়ী ছেলেসন্তানরা সেবার ব্যবস্থা না করলে মেয়ে-জামাইকেও সেবার দায়িত্ব নিতে হবে। অনেকে সেবার কথা বললে শুধু স্বামীর বাবা-মায়ের কথাই বলেন, শ্বশুর-শাশুড়ির কথা ভুলে যান।
গ) বহুবিবাহের বিষয়টাও অনেকক্ষেত্রে সামাজিক, সরাসরি ধর্মীয় নয়। অর্থাৎ ধর্মীয়ভাবে বৈধ, তাই আপনি চাইলেই বহুবিবাহ করবেন, এটা বলা যাবে না। কেননা বিবাহ সামাজিক বিষয়। বহুবিবাহে পারিবারিক অকল্যাণের আশঙ্কা থাকলে সেটা বর্জন করাই শ্রেয়।
প্রশ্ন হচ্ছে, রান্না ও শাশুড়ির সেবাকে পরীপূর্ণ ধর্মীয় বিষয় বানাতে চাইলে বহুবিবাহকেও কেন পূর্ণ ধর্মীয় বিষয় বানাবেন না?
No comments: