ads

ফেসবুকে নন মাহরামের সাথে চ্যাটিং করার হুকুম

❒ জেনে রাখুন,পুরুষ মহিলার সঙ্গে বা মহিলা পুরুষের সঙ্গে প্রয়োজন ছাড়া এবং ফিতনার আশংকা মুক্ত হওয়া ব্যতীত কথা বলা যায়েজ নেই।তাছাড়া অপরিচিত নারী পুরুষের কথা বলার সময় কখনোই কোমল স্বরে কথা বলা যাবে না।দেখুন,আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেনঃ

یٰنِسَآءَ النَّبِیِّ لَسۡتُنَّ کَاَحَدٍ مِّنَ النِّسَآءِ اِنِ اتَّقَیۡتُنَّ فَلَا تَخۡضَعۡنَ بِالۡقَوۡلِ فَیَطۡمَعَ الَّذِیۡ فِیۡ قَلۡبِہٖ مَرَضٌ وَّ قُلۡنَ قَوۡلًا مَّعۡرُوۡفًا
হে নবী-পত্নিগণ, তোমরা অন্য কোন নারীর মত নও। যদি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে (পরপুরুষের সাথে) কোমল কণ্ঠে কথা বলো না, তাহলে যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হয়। আর তোমরা ন্যায়সঙ্গত কথা বলবে।
[ সূরা আহযাব আয়াত নং ৩২ ]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের প্রতি যদি এই বিধান হয়,তবে সাধারন নারীদের প্রতি এ বিধান কতটা গুরত্বপূর্ণ।উম্মতের নারীদের মধ্যে সবচেয়ে তাকওয়াবান ছিলেন উম্মুল মু’মিনিনরা।আর উম্মতের পুরুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাকওয়াবান ছিলেন সাহাবীরা ( রাদি আল্লাহু তা’আলা আনহুম )।আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন,আপনি কি তাদের মত তাকওয়াবান?পুরো উম্মতের তাকওয়া একত্রিত করলে একজন সাহাবীর সমান তাকওয়া হবে না।তাই এ বিধানকে আঁকড়ে ধরুন,ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকুন।
❒ মেসেজগুলো সাধারনত দু ধরনের হয়ে থাকে।
১। শিক্ষামূলক সেবা সম্বলিত মেসেজ আদান-প্রদান।
যেমনঃ নারী-পুরুষদের পরষ্পর কোনো গবেষণা বা বইপত্র বিনিময়,অথবা কোন সমস্যার সমাধান। ( অর্থাৎ এমন জরুরত বিষয়ে মেসেজ করা যার সমাধান কেবল তার কাছেই আছে )
এসব মেসেজের বিধান ব্যক্তির নিজের উপর নির্ভর করে।নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই ।সুতরাং যে নিজের ভেতর দুর্বলতা অনুভব করে এবং শয়তানের ফাঁদে পড়ে যাওয়ার আশংকা করে,তার জন্য এসব মেসেজ থেকেও বিরত থাকা এবং নিজেকে হিফাজত করা ওয়াজিব।অন্যদিকে যে ব্যক্তির নিজের উপর আস্থা এবং দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে তার জন্য কিছু শর্তসাপেক্ষে এ ধরণের মেসেজ আদান-প্রদান বৈধ।
প্রথম শর্তঃ কোন প্রকার ব্যক্তিগত প্রশ্ন করা যাবে না।যেমনঃ বয়স,বৈবাহিক অবস্থা,বাসস্থান,পড়াশোনা ইত্যাদি।
দ্বিতীয় শর্তঃ নির্ধারিত বিষয়বস্তু বহির্ভূত কোনো কথা বলা যাবে না।দুজনের মধ্যে কেউ যদি এমন কোনো কথা বলে,অপরজনের জন্য ওই বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানাতে হবে।
তৃতীয় শর্তঃ মেসেজগুলো সম্পর্কে অভিভাবকগণ অবগত থাকতে হবে।যেমনঃ স্ত্রীর মেসেজের ক্ষেত্রে স্বামী অবগত থাকা,মেয়ের মেসেজ সম্পর্কে বাবা/ভাই অবগত থাকা।
২।পরিচিতি মেসেজ।
ফেইসবুকের এ নীল দুনিয়ায় একদল বিভ্রান্ত যুবক যুবতীদের ফাঁদে ফেলার জন্য কখনো পরিচিতি মেসেজ লিখে থাকে।নারী-পুরুষের মধ্যে এ ধরনের মেসেজ আদান-প্রদান কখনো বৈধ নয়।ইসলামে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করা হারাম।তেমনি প্রত্যেক ওই কাজ যা মানুষের হারাম পথে নিয়ে যায়,তাও হারাম।যদিও তা মুবাহ বা বৈধ কোন কাজ হয়।এ দিকে ইঙ্গিত করেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেন,
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّیۡطٰنِ ؕ
হে মুমিনগণ, তোমরা শয়তানের পদাঙ্কসমূহ অনুসরণ করো না।
[ সূরা নূর,আয়াত নং ২১ ]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“ সাবধান! কোন পুরুষ যেন অপরিচিত নারীর সাথে গোপনে মিলিত না হয়।কারণ এক্ষেত্রে শয়তান তাদের তৃতীয়জনরূপে হাজির হয়।”
[ মুসনাদে আহমাদ,হাদীস নং ১৫৬৯৬ ]
আতা ইবনে আবি রাবাহ রহিমাহুল্লাহ বলেন, “ আমি কোনো কুশ্রী দাসীর ক্ষেত্রেও নিজের কুপ্রবৃত্তিকে নিরাপদ মনে করি না। ”
[ সিয়ারু আলা নুবালা,৫/৮৮ ]
অনেক যুবক-যুবতী বলে থাকেঃ নিজের ব্যপারে আমার আস্থা আছে!তাদের জানা উচিত,ফিতনার স্থলে গিয়ে ঈমান পরিক্ষা করা মুসলমানের জন্য যায়েজ নেই।কারণ এতে ভ্রষ্টতা ও বিচ্যুতির আশংকা থাকেই।
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে যে দাজ্জালের আবির্ভাবের কথা শোনে সে যেন তার থেকে দূরে সরে যায়।কারণ দাজ্জাল যার কাছে আসবে ,সে তাকে দেখে মুমিন মনে করবে।ফলে সে তার সন্দেহজনক বিষয়গুলোর অনুসরণ করতে থাকবে।”
[ মুসতাদরাকে হাকেম, ৪/৫৭৬ ]
~ শাইখ আলী মুহাম্মদ শ্বাওকী হাফিজাহুল্লাহ।

No comments:

ads
Theme images by A330Pilot. Powered by Blogger.