বিয়ের নিয়ত কেমন হওয়া উচিৎ
এটা তো মোটামুটি আমরা সবাই জানি, আল্লাহ বান্দার সাথে সেরকম আচরণ করেন যেরূপ বান্দা তাঁর সম্পর্কে ধারনা করে। আবার নিয়তের কারণেও অনেকে বিপদে পড়েন, বিপদ থেকে উদ্ধার পান। ধরেন, বহুদিন ধরে ব্যাংকে টাকা জমাচ্ছেন যদি কোন বিপদ হয় তবে এই টাকা দিয়ে বিপদ কাটবে। তাহলে কি হল? ইয়াকিন চলে গেল টাকার উপর। জানেন তো, হাদিসে আছে যার ভাষ্য মোটামুটি এরকম, যে যেটা লটকাল তাকে সেটির উপরে সোপর্দ করে দেয়া হয়, তার উপর রবের কোন দায় দায়িত্ব থাকে নহে, দেখা জ্যায় ওই লটকানো কড়ি/বালা খুলে ফেললে তার অসুখ সত্যি বেড়ে যায়।
যা বলছিলাম, দৈনন্দিন জীবনেও দেখা যায়, আল্লাহ সত্যিই একদিন এমন বিপদ/রোগ দেন যে পড়ে ওই টাকা খরচ করেই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে হয়। তারপর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন। আরে ভাই! আল্লাহ চাইলে তো এই বিপদে আপনাকে নাও ফেলতে পারতেন, আপনি খারাপ নিয়ত খারাপ ধারণা করে কেন টাকা জমাইতে গেলেন, ভাল নিয়তে জমাইতেন! ভাল ধারণা রাখতেন!
এবার আসেন আসল কথায়, কিছু কন্যার অভিভাবকরা মেয়েদের শিক্ষিতা বানান এই নিয়তে যে, ভবিষ্যতে যদি কিছু ঘটে ( স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ) তাইলে সে অন্তত পথে বসবে না। কিছু করে খেতে পারবে, অন্যের গলগ্রহ হয়ে জীবন কাটাতে হবে না। কেন ? তারা নিয়ত করতে পারলেন না যে, এই সুশিক্ষা দিয়ে তাদের মেয়ে তাদের নাটিপুতিদের গড়ে তুলবে। আর তাদের মেয়েরাও কেমন যেন সেরকম নিয়তেই পড়াশুনা করেন, স্বামীকে দেখিয়ে দিবেন টাইপ কিছু।
আবার অনেকে বিশাল এক মোহর দাবি করেন পাত্রের নিকট, নিয়ত এই যে, এই মোহর কণ্যার সিকিউরিটি স্বরূপ থাকবে, ভবিষ্যতে যদি কিছু হয়!
আর ভাই! আপনাদের নিয়ত ই তো খারাপ। সংসার শুরুর আগেই আপনারা সেটা ভাঙলে কি হবে মেয়ে কৈ যাবে সেই ফিকিরে ব্যস্ত। বিস্বাস করেন, এরকম নিয়ত যারা করেন, তাদের সন্তানদের অনেকের কপালেই ওই ডিভোর্স টাই জুটে। কারন তারা ধারনাই করেছেন এমন, আল্লাহ তাদের এরকম পরিস্থিতিতেই ফেলেন। অতঃপর দেখা যায় ওই জ্ঞান, অর্থ দিয়ে একটা চাকরি করে সিঙ্গেল লাইফ লীড করতে হয়।
একটা বাস্তব উদাহরণ দিয়ে শেষ করব। এক ভাইয়ের ডিভোর্স হৈসে। তার স্ত্রীর পিতা মেয়ের মাহর কম করেন নাই , প্রায় পঞ্চক লক্ষ্য টাকা, লগে শর্ত মেয়েকে উচ্চ শিক্ষা দিতে হইবেক। তো ভাই কোনোরকম ঢেঁকি গিলেছিলেন, মাহর শোধ করেছেন, স্ত্রীকে ভাল জায়গায় পড়ানোর চেষ্টা করেছেন। যাই হোক সংসার টি আর টেকেনি। দোষ কমবেশি উভয় পক্ষেরই ছিল, তবে আমি দেখেছি মেয়ের অবিভাবক এর রাগ ইগো আর কুবুদ্ধির কারনে বোনের সংসার টিকেনি। ভাইটি আবার বিয়ে থা করে ভালোই আছেন। কিন্তু তার স্ত্রীর এখন অব্দি গতি হয়নি। সেই টাকা আর পড়াশোনার উপর ভর করেই তাকে হয়ত সামনের পথটুকু পাড়ি দিতে হবে। এরকম ঘটনা একটা নয়, বহু আছে। আর ওই মেয়েটা হয়ে যায় পুরুষ বিদ্বেষী ফেমিনিষ্ট। এর দায়ভার অনেকাংশে তার অবিভাবকের।
তাই পরিশেষে বলব, নিয়ত ঠিক করেন। মেয়েকে পড়াবেন উচ্চশিক্ষা দিবেন ভাল কথা, সেটি তার খারাপ ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, তার গ্যারান্টি হিসেবে কেন? স্বামীর সংসার আলোকিত করার নিয়তে করা যায় না? এত মোহর ধার্য্য করে স্বামীকে বিপদে ফেলা কেন? সহজ করা যায় না? যে যেরকম করে আল্লাহ তার সাথে সেরকমই করেন। আপনেরা ছাড় দিন সহজ করুন, আপনাদের ক্ষেত্রেও ছাড় দেয়া হবে, আল্লাহ সহজ করবেন, আপনাদের সন্তানদের দাম্পত্য জীবনে সুখে রাখবেন, বরকত দিবেন।
Abu Sumaiya
No comments: